✖✖সূরা ইয়াসীনের ফাযীলাত✖✖
"হাদীছে ছূরায়ে ইয়াছিনের বহু ফজীলত বর্ণিত আছে। একটি রেওয়ায়েতে আছে, প্রত্যেক জিনিসের একটি দিল আছে। কোরআনে দিল হইল ছূরা ইয়াছীন। যে ব্যক্তি ছুরা ইয়াছীন পড়িবে আল্লাহ পাক তাহাকে দশ খতম কোরআনের ছাওয়াব প্রদান করিবেন।(তাবলীগী আমলের ফাজায়েলে কুরআন ২৭৩,)
শায়খ সাহেব সূত্রবিহীন হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি সহীহ কি যঈফ তা উল্লেখ করাতো দূরে থাক অন্তত উদ্ধৃতিটা দিলেও আমরা বুঝতে পারত...াম হাদীসটি কোন্ পর্যায়ের। যাই হোক এবার লক্ষ্য করুন, হাদীসটি কোন্ পর্যায়ের। :
ان لكل شئ قليا وان قلت القران (يس) من قراها فكانما قرأ القران عشر مرات-
প্রতিটি বস্তুর হৃদয় রয়েছে, আর কুরআনের হৃদয় হচ্ছে সূরা ইয়াসীন। যে ব্যক্তি তা পাঠ করল, সে যেন দশবার কুরআন পাঠ করল। (সিলসিলাতুল আহাদীসিয যঈফা ১ম খণ্ড, হাঃ ১৬৯, পৃঃ ১৯৬)
হাদীসটি জাল। এটিকে ইমাম তিরমিযী (৪/৪৬) এবং দারেমী (২/৪৫৬) হামীদ ইবনু আবদুর রহমান সূত্রে ....... হারূন আবূ মুহাম্মাদ হতে এবং তিনি মুতাকিল ইবনু হায়য়ান হতে ....... বর্ণনা করেছেন।
হাদীসটির দুর্বলতা সুস্পষ্ট; বরং এটি বানোয়াট এই হারূনের কারণে। যাহাবী তাঁর জীবনী বর্ণনা করতে গিয়ে তিরমিযী হতে তার মাজহুল (অপরিচিত) হওয়ার উক্তিটি উল্লেখ করে বলেন, আমি তাকে মিথ্যার দোষে দোষী করছি সেই হাদীস দ্বারা যেটি কাযা‘ঈ তার ‘মুশানাদুশ শিহাব’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। অতঃপর এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
ইবনু আবী হাতিম ‘আল-ইলাল’ গ্রন্থে বলেন, আমি আমার পিতাকে এ হাদীসটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেন, এই মুতাকিল হচ্ছে ইবনু সুলায়মান। আমি এ হাদীসটি সেই কিতাবের প্রথমে দেখেছি যেটি মুতাকিল ইবনু সুলায়মান জাল করেছিলেন। হাদীসটি বাতিল, তার কোন ভিত্তি নেই। আলবানী (রহ:) বলেন, এই মুকাতিল ইবনু হায়য়ান নন বরং তিনি হচ্ছেন ইবনু সুলাইমান; যেমনভাবে আবূ হাতীম দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেছেন। তিরমিযী এবং দারেমী কর্তৃক মুতাকিল ইবনু হায়য়ান হিসাবে উল্লেখ করা সম্ভবত কোন বর্ণনাকারী হতে ভুলক্রমে সংঘটিত হয়েছে। সেটিকে কাযা’ঈর বর্ণনা শক্তি যোগাচ্ছে। আবুল ফাত্হ আল-আযদী বলেন : এই মুকাতিল ইবনু হায়য়ান সম্পর্কে ওয়াকী বলেন : তাকে মিথ্যুক বলা হয়েছে।
এছাড়া যাহাবী বলেন : আবুল ফাত্হ এরূপ বলেছেন। আমার ধারণা তার মধ্যে ইবনু হায়য়ান না ইবনু সুলাইমান এ দুয়ের ব্যাপারে গড়মিল সৃষ্টি হয়েছে। কারণ ইবনু হায়য়ান হচ্ছেন একজন সত্যবাদী বর্ণনাকারী। ওয়াকী‘ যাকে মিথ্যুক বলেছেন তিনি হচ্ছেন ইবনু সুলাইমান। অতএব আমি (যাহাবী) বলছি: এই মুকাতিল হচ্ছে ইবনু সুলাইমান।
আল্লামা আলবানী বলেন : এটি যখন প্রমাণিত হয় যে, তিনি ইবনু সুলাইমান তখন বলতে হচ্ছে যে, হাদীসটি জাল। এছাড়া বর্ণনাকারী হামীদ একজন মাজহুল রাবী, যেমনভাবে হাফিয ইবনু হাজার ‘আত্-তাকরীব’ গ্রন্থে বলেছেন।
মুসলিম ভ্রাতাগণ! এবার একটু ভাবুন, সূত্রবিহীন এ জাল হাদীস বর্ণনা করার হেতু কি? এটাকি উম্মাতে মসুলিমাহকে ফাযীলাতের নামে ধোঁকা দেয়া নয় কি