(১) হারাম :
(ক) যে সম্পর্কে শরী‘আতে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে। যেমন- দাবা, লুডু, পাশা ইত্যাদি (খ) যে খেলায় প্রাণীর ছবি, নাচ-গান ও বাদ্য-বাজনা থাকে (গ) যে খেলা ঝগড়া-বিবাদ ও নোংরামিতে প্ররোচিত ক... রে (ঘ) যে খেলায় অহেতুক অর্থের ও সময়ের অপচয় হয়।
(২) জায়েয :
(ক) দৌড় প্রতিযোগিতা, সৈনিকদের কুচ-কাওয়াজ, অস্ত্রচালনা, তীর নিক্ষেপ ইত্যাদি। (খ) সাতার কাটা।
(৩) শর্তাধীনে জায়েয :
(ক) যদি ঐ খেলার সাথে জুয়া যুক্ত না থাকে (খ) যদি ঐ খেলা কোন ফরয কাজে বাধা না হয়। যেমন ছালাত, ছিয়াম প্রভৃতি (গ) যদি ঐ খেলা কোন ওয়াজিব কাজে বাধা না হয়। যেমন পিতা-মাতার আনুগত্য, পারিবারিক দায়িত্ব পালন, লেখা-পড়াও জ্ঞানার্জন প্রভৃতি (ঘ) যদি ঐ খেলায় কোন অপব্যয় না থাকে (ঙ) যদি ঐ খেলায় অধিক সময়ের অপচয় না হয় (চ) যদি ঐ খেলা ইসলামী শালীনতা বিরোধী না হয়। যেমন হাঁটুর উপরে কাপড় তোলা, মেয়েদের প্রকাশ্যে খেলা করা ইত্যাদি।
স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য দৈনিক কিছু সময়ের জন্য শরীর চর্চা ও নির্দোষ খেলা-ধূলা ইসলামে জায়েয। এতদ্ব্যতীত স্রেফ আনন্দ-ফূর্তির জন্য খেলা-ধূলা ইসলামে অনুমোদিত নয়। আল্লাহ বলেন, ‘যারা নিজেদের দ্বীনকে খেল-তামাশার বস্ত্ততে পরিণত করেছিল এবং পার্থিব জীবন যাদেরকে ভুলিয়ে রেখেছিল, আজকে আমরা তাদের ভুলে যাব। যেমন তারা এদিনের সাক্ষাতের কথা ভুলে গিয়েছিল এবং তারা আমার আয়াত সমূহকে অস্বীকার করেছিল’ (আ‘রাফ ৭/৫১)।
অতএব যেসব খেলা পরস্পরে শত্রুতা ও হিংসা সৃষ্টি করে এবং ছালাত ও আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত রাখে, সে সব খেলায় আর্থিক জুয়া থাক বা না থাক, তা অবশ্যই নিষিদ্ধ এবং তা মাইসির-এর অন্তর্ভুক্ত।
ক্বাসেম বিন মুহাম্মাদ বলেন, ‘প্রত্যেক বস্ত্ত যা আল্লাহর স্মরণ হতে এবং ছালাত হ’তে মানুষকে ভুলিয়ে রাখে, সেটাই ‘মাইসির’ (অনর্থক) (তাফসীর ইবনু কাছীর)।
ইমাম কুরতুবী বলেন, প্রত্যেক খেলা যা আপোষে শত্রুতা ও হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে এবং ছালাত ও আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত রাখে, তা মদ্যপানের ন্যায় এবং তা হারাম হওয়া ওয়াজিব। আর এটা জানা কথা যে, মদ মানুষকে নেশাগ্রস্ত করে। কিন্তু জুয়া নেশাগ্রস্ত করে না। এতদসত্ত্বেও এদু’টিকে আল্লাহ সমভাবে হারাম করেছেন মর্মগত দিক দিয়ে দু’টির পরিণতি একই হওয়ার কারণে।"